সদস্য নবায়নে যেন আওয়ামী লীগ না ঢুকে: মির্জা ফখরুল
নিজস্ব প্রতিবেদক : নতুন সদস্য নবায়নে বিএনপিতে যেন আওয়ামী লীগের কোনো নেতা-কর্মী না ঢুকে পড়ে সে ব্যাপারে কঠোর নির্দেশনা দিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
নেতা-কর্মীদের সতর্ক করে তিনি বলেন, ‘আজকে যে সদস্য নবায়ন করা হচ্ছে, সেখানে যেন কোনো আওয়ামী লীগ না থাকে। কারণ এটা পরীক্ষিত, আওয়ামী লীগের কেউই ভালো না। আওয়ামী লীগ নিজের স্বার্থ ছাড়া আর কারও স্বার্থ দেখতে পারে না। তাই তাদের কাউকে দলে নেওয়া যাবে না। তবে নিরপেক্ষ কেউ থাকলে তাকে অবশ্যই দলে আসার জন্য আহ্বান জানাবেন।’
বুধবার (১৮ জুন) দুপুরে রাজধানীর উত্তরায় বিএনপির সদস্য নবায়ন এবং প্রাথমিক সদস্য সংগ্রহ অভিযান কর্মসূচির ঢাকা মহানগর উত্তরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল।
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের মতো বিএনপি ভোট কারচুপি করবে না এবং আইন ভঙ্গ করবে না। বিএনপি জনগণের অধিকার হরণ করে নয়, বরং বিনয়ী হয়ে ভোট চাইবে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানও একই কথা বলেছেন যে, মানুষকে শাসিয়ে বা তাদের অধিকার হরণ করে ভোট পাওয়া যাবে না; বরং বিনয়ী হয়ে ভোট চাইতে হবে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সময় ভোটকেন্দ্রে কেউ যেতে পারেনি। ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার আগেই তার ভোট দেওয়া হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু আমরা এটি চাই না। আমরা নির্বাচনের সময় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার চেয়েছিলাম, যাতে সবাই তার নিজের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে।’
বিগত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ সব প্রতিষ্ঠানকে দলীয়করণ করেছে-এমন অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘একটি ফ্যাসিবাদী সরকার গত ১৫ বছর ধরে আমাদের সব প্রতিষ্ঠানকে দলীয়করণ করেছে। নির্বাচনব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছে এবং প্রশাসনকে দলীয়করণ করেছে। গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ যা করেছে আমরা এসব কিছুই করব না। আওয়ামী লীগের পরিণতি থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে। আমরা যেন সবার অধিকার রক্ষা করতে পারি।’
অনুষ্ঠানে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিচক্ষণতার প্রশংসা ও ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করে লন্ডনের বৈঠককে ‘ঐতিহাসিক’ উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা ডিসেম্বরে নির্বাচনের কথা বলেছিলাম, আর ইউনূস সাহেব বলেছিলেন এপ্রিলে। এখানে এক প্রকার দ্বিধাদ্বন্দ্ব ছিল। কিন্তু তারেক রহমানের বিচক্ষণতা দেখে, তিনি দেশের স্বার্থে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেছেন, যাতে কোনো বিপদ না আসে। এমন বিচক্ষণ নেতা খুব কমই আছে। তাই তারেক রহমান ও ড. ইউনূসকে এজন্য ধন্যবাদ জানাই।’
অনুষ্ঠানে নিজের বয়স এবং দলে তরুণ নেতৃত্বের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের বয়স হয়েছে। যে কারণে বক্তব্য শুরু করতে আমার সময় লেগেছে। তার মানে আমাদের বয়স হওয়ায় কর্মক্ষমতা কমে গেছে। তাই আমাদের জায়গায় তরুণদের আসতে হবে, তাদের সুযোগ করে দিতে হবে। তরুণদের নেতৃত্বকে আরও শক্তিশালী করতে হবে। নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা থাকতে হবে।’
তুরাগ থানা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক হারুন অর রশীদ খোকনের সভাপতিত্বে ও সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক হাজী মো. জহিরুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হক, মহানগর উত্তরের সদস্যসচিব মো. মোস্তফা জামান, যুগ্ম আহ্বায়ক মোস্তাফিজুর রহমান সেগুন, এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন, এবিএমএ রাজ্জাক, এম কফিল উদ্দিন আহমেদ, মুহাম্মদ আফাজ উদ্দিন, হাজী মো. ইউসুফ প্রমুখ।