প্রেমিকা ও তার শাশুড়িকে হত্যার পর আত্মহত্যা করে শাহজালাল
ঘাটাইল (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি : টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলায় একটি বাড়ি থেকে দুই নারীসহ তিনজনের মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় রহস্য উদ্ঘাটনে কাজ করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
শনিবার সকালে উপজেলার দিগর ইউনিয়নের কাশতলার খামারপাড়া থেকে জয়েন উদ্দিনের স্ত্রী সুমি বেগম (৩০), জয়েনের মা জামেলা বেগম (৬৫) এবং কালিহাতি উপজেলার সাতুটিয়া বাজার এলাকার সোহরাব আলীর ছেলে শাহজালালের (২৫) লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় সুমির ছেলেকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
প্রাথমিক অনুসন্ধান শেষে পুলিশ জানায়, শাহজালাল প্রথমে সুমি বেগম এবং জামেলা বেগমকে ছুরি দিয়ে হত্যা করে। পরে সে নিজেই ছুরি দিয়ে আত্মহত্যা করে।
ঘটনার পর পুলিশ সুপার, পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই), সিআইডি, র্যাব এবং ডিবি পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।
টাঙ্গাইল পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে বলেন, “শাহজালাল প্রথমে সুমি বেগম এবং জামেলা বেগমকে ছুরি দিয়ে হত্যা করে। পরে সে নিজে আত্মহত্যা করে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। সুমি বেগম এবং জামেলা বেগমের শরীরে বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে এবং রেঞ্জ দিয়ে মাথায় আঘাত করা হয়। আর শাহজালালের বুকের মধ্যে ছুরির একটিমাত্র আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।”
পুলিশ সুপার আরও বলেন, স্বামী জয়েন উদ্দিন বিদেশ চলে যাওয়ার পরও সুমি বেগমের সাথে শাহজালালের সম্পর্ক ছিল। ধারণা করা হচ্ছে শাহজালাল সুমিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য ওই বাসায় গিয়েছিল। কিন্তু সুমি পারিবারিকভাবে যেতে রাজি না হওয়ায় এ ঘটনা ঘটতে পারে। বাইরে থেকে অন্য কেউ ঘরে প্রবেশ করেছে এমন কোনো তথ্য প্রমাণ এবং নমুনা পাওয়া যায়নি। এ হত্যার সাথে সংশ্লিষ্ট বস্তু এবং ধারালো ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে। এগুলো হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত হয়েছে।
এ ঘটনার পরে তাদের ঘরের দেয়ালে রক্ত দিয়ে সুমিকে উদ্দেশ্য করে কয়েকটি ভুল বানানে একটি লেখা দেখা যায়। লেখাতে রয়েছে, “এমনটা হতো না যদি আমার সুমী আমার কাছে থাকতো এই সবকিছুর জন্য সুমীর বাবা দায়।”
দেয়ালে লেখা পাওয়ার ব্যাপারে পুলিশ সুপার বলেন, লেখাটি কে লিখেছে এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। দেয়ালের লেখার সাথে সন্দেহভাজনদের লেখা মিলিয়ে দেখা হবে। ইতিমধ্যে আমরা সন্দেহভাজনদের লেখাগুলো সংগ্রহ করেছি। এ লেখাগুলোর মতামত আনার জন্য সিআইডি প্রেরণ করা হবে।
জামেলা বেগমের ভাই মোখলেছ বলেন, শাহজালালের সাথে সুমি এক বছর আগে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করে। পরে ভাগিনা জয়েন উদ্দিন তার শিশু সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে কয়েক মাস আগে সুমিকে ফিরিয়ে এনে আবার ঘরসংসার শুরু করে সৌদি চলে যায়। জয়েন উদ্দিন বিদেশ চলে যাবার পরেও সুমির সাথে শাহজালালের যোগাযোগ ও বন্ধুত্ব ছিল। সেই যোগাযোগ থেকে রাতের কোন এক সময় হয়তো শাহজালাল সুমিদের ঘরে প্রবেশ করে থাকতে পারে।