শুক্রবার, ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নগরবাসী সবাই মেয়রের দায়িত্ব পালন করতে পারে

news-image

অনলাইন ডেস্ক : ‘জনতার মুখোমুখি নগর সেবক’ কর্মসূচির আওতায় মঙ্গলবার সন্ধ্যায় লাইভ আলাপচারিতায় অংশ নেন তিনি
নগরবাসীকে সম্পৃক্ত করেই কাজগুলো এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। আমি নির্বাচিত মেয়র, কিন্তু নগরবাসী সবাই মেয়রের দায়িত্ব পালন করতে পারে— বললেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।

‘জনতার মুখোমুখি নগর সেবক’ কর্মসূচির আওতায় মঙ্গলবার সন্ধ্যায় লাইভ আলাপচারিতায় অংশ নেন তিনি।

পৌনে দুই ঘণ্টার এই আয়োজনে নগরবাসীর প্রশ্নের উত্তর দেন মেয়র। এ সময় সবাইকে নিয়ে ‘সবার ঢাকা গড়ে তোলার’ অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।

‘পরিচ্ছন্ন নগর ঢাকা কীভাবে করা হবে?’ এ প্রশ্নের উত্তরে মেয়র আতিকুল ‘ক্লিন সিটি, গ্রিন সিটি’ স্লোগানটিকে সামনে আনেন। শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন ডিএনসিসির প্রথম ও প্রয়াত মেয়রের কথা। তার নেওয়া কিছু উদ্যোগ এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন বলে জানালেন।

আরও বলেন, শহর ঢাকা এতটাই অপরিকল্পিতভাবে গড়ে উঠেছে যে, কাজগুলো থেকে সুফল পাওয়া কষ্টসাধ্য। তার ভাষ্যে, “রাজউক নগরে বড় বড় ভবন করেছে, কিন্তু এসব ভবনে সৃষ্ট ময়লা কোথায় ফেলা হবে সে ব্যবস্থা করেনি।”

মেয়র জানান, অটোমেশনে যাচ্ছে নগর পরিচ্ছন্ন রাখার ব্যবস্থা। সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে রোড সুইপার কেনা হয়েছে।

নগরের ময়লাকে কীভাবে সম্পদে পরিণত করা যায় সে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় বর্জ্য বিদ্যুৎ উৎপাদনের উদ্যোগের কথা জানালেন মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম। রাজধানীর আমিনবাজার ল্যান্ডফিলে এই বিদ্যুৎ প্ল্যান্ট হচ্ছে।

খাল দখলমুক্ত করার প্রশ্নে বলেন, জনগণের শক্তি নিয়ে তিনি এসব দখলকারী পেশি শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করবেন। খাল মুক্ত করে দুপাশে ওয়াকওয়ে করে দেওয়া হবে। গাছ লাগানো হবে। ৫ জনের হীনস্বার্থের কারণে ৫০০ জন কষ্ট পেতে পারে না বলে তিনি উল্লেখ করেন।

এডিস মশা নিধন প্রশ্নে বলেন, “স্বাস্থ্য জনগণের মৌলিক অধিকার, এ বিষয়ের প্রশ্নে আমি আনন্দিত। গত বছর দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই এই মশার প্রাদুর্ভাবে ডেঙ্গু জ্বর ছড়িয়ে পড়ে। আমরা অনেক প্রিয় নগরবাসীকে হারিয়েছি। তখন আমি সময় চেয়েছিলাম এবং এ বছর আমরা মশার লার্ভা ধ্বংসে চিরুনি অভিযান চালিয়েছি। তাতে এবার ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব ততটা ছড়াতে পারেনি।” উদাহরণ হিসেবে চিত্র তুলে ধরেন। এক ধনাঢ্য পরিবারের বাড়ির সামনে যেমন ছিল ঝকঝকে দামি দামি গাড়ি, পেছনটা ছিল ততোধিকই নোংরা, এডিস মশার আবাসস্থল।

করপোরেশনের পক্ষ থেকে মশা নিধনে ফোর্থ জেনারেশন ওষুধের ব্যবহার, লার্ভিসাইড, এডাল্টিসাইড ব্যবহারের কথা জানিয়ে নগরবাসীকে আশ্বস্ত করলেন তিনি।

সড়কে বেওয়ারিশ কুকুর নিধন নিয়ে প্রাণীপ্রেমীদের উদ্বেগের বিষয়ে নিজে সহমর্মিতা প্রকাশ করে মেয়র আতিকুল বলেন, পশু-পাখি ও গাছের প্রতি তারও প্রেম রয়েছে। নগরে যারা পশুপালন করেন এমন অনেককে ডেকে পরামর্শ করে, রাস্তার বেওয়ারিশ কুকুরগুলোকে কীভাবে সুরক্ষা দেওয়া যায় তার উপায় বের করা হয়েছে। কুকুরগুলোকে ভ্যাকসিনেশনের মাধ্যমে বন্ধ্যাকরণ যার একটি অন্যতম পথ, জানান ডিএনসিসি মেয়র। তিনি স্পষ্ট করে ঘোষণা দেন, উত্তর সিটি করপোরেশনে একটি কুকুরও মেরে ফেলা হবে না।

নগরে মাথার ওপর ঝুলে থাকা তার অপসারণ প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, এ ব্যাপারে আমার সোজাসাপ্টা কথা, যার তার লাগিয়েছে তারাই খুলে নেবে।

বস্তিবাসীর জন্য নির্বাচনী অঙ্গীকারের কথা স্মরণ করিয়ে দিলে মেয়র জানান, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে বস্তিগুলোতে হাইরাইজ ভবন গড়ে তুলে সেগুলোতে তাদের থাকার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

এই আলাপচারিতার সঞ্চালক ছিলেন চিত্রনায়ক ফেরদৌস আহমেদ। সূত্র : দেশ রূপান্তর

 

এ জাতীয় আরও খবর