শুক্রবার, ৩রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ ২০শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ছেলেদের হতাশার বছরে প্রাপ্তি মেয়েদের

news-image

অনলাইন ডেস্ক : দেখতে দেখতে আরও একটি বছরের শেষ হচ্ছে। আর মাত্র একদিন পরেই নতুন বছর। এরপরই ২০২২ সালকে বরণ করে নিবে সারাবিশ্ব। নতুন বছর যত কাছে এগিয়ে আসছে ঠিক ততই মানুষ হিসাব কষতে শুরু করেছে পুরাতন বছরের। তবে ২০২১ সালটি ছিলো বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য ঘটনাবহুল বছর। এ বছরে বাংলাদেশ ক্রিকেটে কিছু গৌরব অর্জন করতে পারলেও মাঠের বাইরে ছিলো নানান সমস্যা এবং ধারাবাহিক হারের ব্যার্থতা।

বাংলাদেশ নারী ক্রিকেটের খবর হয়ত খুব কম মানুষই রাখেন। কিন্তু এই নারীরা প্রথমবারের মতো নারী বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে ইতিহাস সৃষ্টি করেছে এই বছরেই। কিন্তু সব সময় স্পটলাইটে থাকা পুরুষ ক্রিকেট শোচনীয়ভাবে ব্যর্থ হয়েছে। যে কারণে অনেকেই বছরটিকে ভুলে যেতে চাইবে। বাংলাদেশ ক্রিকেট সম্ভবত ২০২১ সালকে মনে রাখতে চাইবে না।

আজকের লেখায় বাংলাদেশ জার্নাল পাঠকদের জন্য ঘটনাবহুল এ বছরের নানা স্মৃতি তুলে ধরা হল-

বাংলাদেশের সংক্ষিপ্ত পরিসংখ্যান:

২০২১ সালে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল এখন পর্যন্ত ৭টি টেস্ট ম্যাচ খেলেছে। আর এই ৭টি ম্যাচের মধ্যে বাংলাদেশ জয় পেয়েছে কেবল ১ ম্যাচে তাও আবার জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। বাকি ৫টি ম্যাচেই হারতে হয়েছে টাইগারদের, আর ১টি ম্যাচে ড্র করেই সন্তুষ্ট থাকতে হয় বাংলাদেশের। এ তো গেলো বাংলাদেশের টেস্ট ম্যাচের সংক্ষিপ্ত পরিসংখ্যান।

এবার আসা যাক ওয়ানডে ম্যাচে। চলতি বছরে বাংলাদেশ ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছে ১২টি। টাইগাররা টেস্টে হতাশ করলেও ওয়ানডে ফরম্যাটে দারুণ সাফল্য দেখিয়েছে। ১২ ওয়ানডের মধ্যে ৮টি ম্যাচে জয়ের দেখা পেয়েছে টিম-টাইগার। এ বছর ওয়ানডেতে সবচেয়ে বেশি জয় বাংলাদেশেরই। অবশ্য করোনার জন্য বেশ কিছু সিরিজ বাতিল হয়ে যাওয়ায়, অন্যান্য দলগুলো কম ম্যাচ খেলেছে।

টি-২০তে ২০২১ সালে এক বর্ষপঞ্জিতে সর্বোচ্চ ২৭টি ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে বাংলাদেশ জিতেছে ১১টি ম্যাচ। আর হেরেছে ১৬টি ম্যাচ। ৮টি জয় এসেছে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। বিশ্বকাপের আগে ঘরের মাঠে ঐ দুইটি সিরিজ খেলেছিলো টাইগাররা।

সাকিবের প্রত্যাবর্তন:

আইসিসির নিষেধাজ্ঞা শেষে এই বছরেই ক্রিকেটে ফিরেন বাংলাদেশ ক্রিকেটের পোস্টার বয় সাকিব আল হাসান। মাঠে ফিরে সাকিব প্রমাণ করেছেন, ক্রিকেট থেকে দূরে থাকলেও পারফরমেন্সে ছেদ পড়েনি।

তিন ওয়ানডে সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হোয়াইটওয়াশ করা সিরিজের সেরা খেলোয়াড় হন সাকিব। সিরিজে ব্যাট হাতে ১১৩ রান ও ৬ উইকেট নিয়েছিলেন সাকিব। কিন্তু সকাল সবসময় দিনের আলো দেখায় না। আশা করা হচ্ছিলো ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ জিতবে বাংলাদেশ। কিন্তু অভিষেক ম্যাচেই ব্যাট হাতে চমক দেখিয়েছেন মায়ার্স।

বিশ্বের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে অভিষেক টেস্টে ডাবল সেঞ্চুরি করেন মায়ার্স। টেস্টের চতুর্থ ইনিংসে ৩৯৫ রানের টার্গেট। এরপর মায়ার্সের ডাবল-সেঞ্চুরিতে সিরিজের প্রথম টেস্টে নাটকীয়ভাবে ৩ উইকেটে জয় তুলে নেয় ক্যারিবিয়রা। এতে মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়ে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টও হেরে যায় বাংলাদেশ।

বাংলাদেশ বনাম আইপিএল:

ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজ শেষ হওয়ার আগে, শ্রীলংকা টেস্ট বাদ দিয়ে আইপিএল খেলার ইচ্ছা প্রকাশ করার কারণে আবারও শিরোনামে আসেন সাকিব। তার যুক্তি ছিল আইপিএল খেলে টি-২০ বিশ্বকাপের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করা। যদিও বাংলাদেশ ততক্ষণে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে দুই ম্যাচের সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয়ে গেছে। অবশ্য সাকিবের যুক্তি ভালোভাবে গ্রহণ করা হয়নি। তখন বিসিবি সভাপতি বলেছিলেন, ‘আমি কাউকে খেলতে বাধ্য করবো না। এই কঠিন সময়ে তার উচিত দলকে সমর্থন করা এবং জয়ের পথে ফিরতে সাহায্য করা। কিন্তু সে আরেকটি ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট খেলতে যাচ্ছে।’

নিউজিল্যান্ড সফরে বাংলাদেশের দুঃস্বপ্ন:

ক্রিকেটের যেকোনো ফরম্যাটে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম জয়ের সন্ধানে ছিলো বাংলাদেশ। গেল মার্চ মাসে নিউজিল্যান্ডে তিন ওয়ানডে এবং তিন টি-টোয়েন্টি খেলতে গিয়েছিলো টাইগাররা। কিন্তু খালি হাতে ফিরতে হয়েছে বাংলাদেশকে। সফরের একমাত্র অর্জন ছিলো পেসার তাসকিন আহমেদের পারফরমেন্স। তার গতি, দুর্দান্ত লাইন এবং লেন্থ বাংলাদেশকে দারুণ এক পেসার উপহার দেয়। দীর্ঘদিন ধরে যে পেসারের অপেক্ষায় ছিলো টাইগারদের দল।

বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশের পয়েন্ট:

কোয়ারেন্টাইন ও জৈব-সুরক্ষা বলয়ের মাঝে ডাম্বুলায় শ্রীলংকার বিপক্ষে ২টি টেস্ট ম্যাচ খেলে বাংলাদেশ। সিরিজের প্রথম টেস্টটি ড্র হয়, আর দ্বিতীয়টি হেরে যায়। ১০ রানের জন্য ঐ টেস্টের প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরি মিস করেন তামিম ইকবাল। তবে নাজমুল হোসেন শান্ত ১৬৩ রান করেন। আর বাংলাদেশের বাইরে প্রথম সেঞ্চুরির দেখা পান অধিনায়ক মোমিনুল হক। দ্বিতীয় ম্যাচেও হার এড়াতে পারতো বাংলাদেশ, কিন্তু দক্ষতা ও সামর্থ্যের দিক দিয়ে বেশ পিছিয়ে ছিলো টাইগাররা। ডাম্বুলায় প্রথম টেস্ট ড্র করে ৬ পয়েন্ট পেয়েছিলো বাংলাদেশ। বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের প্রথম আসরে এটিই তাদের একমাত্র অর্জন ছিলো। টেস্টটি ড্র করতে না পারলে পয়েন্ট ছাড়াই প্রথম টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ শেষ করতে হতো টাইগারদের।

শ্রীলংকার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জয়:

ঘরের মাঠে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে শ্রীলংকাকে হারিয়ে টেস্টে হারের প্রতিশোধ নেয় বাংলাদেশ। তিন ম্যাচের সিরিজটি আইসিসি ওয়ানডে সুপার লিগের অর্ন্তভুক্ত ছিলো। ২-১ ব্যবধানে সিরিজটি জিতে বাংলাদেশ। ব্যাট হাতে দারুণ ছন্দে ছিলো মুশফিকুর রহিম। এই সিরিজে নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি সাকিব। তিন ম্যাচে মাত্র ১৯ রান ও ৩ উইকেট নেন সাকিব।

মুশফিকের দুর্দান্ত অর্জন: প্রথম বাংলাদেশি ক্রিকেটার হিসেবে আইসিসি প্লেয়ার অফ দ্য মান্থ অ্যাওয়ার্ড পান মুশফিক। ২০২১ সালের মে মাসে দুর্দান্ত পারফরমেন্সের জন্য সাবেক ক্রিকেটার, ধারাভাষ্যকার এবং সিনিয়র ক্রীড়া সাংবাদিক এবং সমর্থকদের ভোটে মে মাসের সেরা খেলোয়াড় হন মুশফিক। শ্রীলংকার বিপক্ষে ঐ সিরিজে ৬৯ গড়ে ২৩৬ রান করেন মুশফিক। দ্বিতীয় ম্যাচে ১২৫ রান করেন প্রথমবারের মত প্রতিপক্ষের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জয়ে প্রধান ভূমিকা রাখেন তিনি। এ মাসে মাসসেরা হওয়ার দৌঁড়ে মুশফিকের প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন পাকিস্তানের হাসা।

অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম টি-২০ সিরিজ জয়:

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের সিরিজটি ৪-১ ব্যবধানে জিতে বাংলাদেশ। ঘরের মাঠে নিচু-ধীরগতির উইকেট বানিয়ে প্রতিপক্ষকে উড়িয়ে দেয় মাহমুদুল্লাহর দল। অবিশ্বাস্য সিরিজ জয়ের নায়ক ছিলেন সাকিব আল হাসান।

১৩১, ১২১, ১২৭, ১০৪ ও ১২২- বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া সিরিজের প্রথম ইনিংসে এটি ছিলো দলীয় স্কোর। এর পরের ইনিংসের রানগুলো ছিলো এমন- ১০৮, ১২৩, ১১৭, ১০৫ ও ৬২। টি-২০তে এত কম স্কোর আগে দেখেনি ক্রিকেট বিশ্ব।

৬২ স্কোরটি আলাদাভাবে মনে রাখবেন। ৬২ রানে অলআউট হয়েছিলো অস্ট্রেলিয়া। সব মিলিয়ে সিরিজে ১০৮২ রান হয়, যা টেস্ট খেলা দেশগুলোর দ্বিপাক্ষিক সিরিজের সর্বনিম্ন। এরপর কিউদের বিপক্ষে সিরিজেও উইকেট একই ছিলো। নিউজিল্যান্ড প্রথম ম্যাচে ৬০ রানে অলআউট হয়। বাংলাদেশ এক মাসেরও কম সময়ের মধ্যে টি-২০তে তাদের সর্বনিম্ন স্কোর করে। এর পাশাপাশি ট্রান্স-তাসমান প্রতিবেশীর বিপক্ষে দুর্দান্ত বোলিংয়ের গৌরব অর্জন করে। সেই লো-স্কোরিং সিরিজেও বাংলাদেশ ৩-২ ব্যবধানে জিতেছিল। কিন্তু এই ফরম্যাটে দুই দেশের বিপক্ষে বাংলাদেশের প্রথম সিরিজ জয় নিয়ে প্রশ্ন উঠে।

সমালোচকরা যুক্তি দিয়েছিলেন, এই ফলাফলটি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ইতিবাচক হবে না, কারণ সেখানকার উইকেট সম্পূর্ণ ভিন্ন হবে। পরবর্তীতে সমালোচকদের মতামতই সঠিক প্রমাণিত হয়। বাংলাদেশের কাছে হেরে যাওয়া, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড শেষ পর্যন্ত টি-২০ বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলে।

ইংল্যান্ডের সফর স্থগিত:

সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে বাংলাদেশ সফরে ৩টি ওয়ানডে ও একটি টি-২০ খেলার কথা ছিল ইংল্যান্ডের। কিন্তু সফরটি স্থগিত করে ইংল্যান্ড এন্ড ওয়েলস (ইসিবি) ক্রিকেট বোর্ড। তবে সিরিজটি বাতিল হয়নি। ২০২৩ সালের মার্চের প্রথম সপ্তাহে বাংলাদেশে আসবে ইংলিশরা। দুই দল তিনটি ওয়ানডে এবং আর টি-২০ খেলবে। ঢাকা ও চট্টগ্রামে দুই সপ্তাহে ছয়টি সীমিত ওভারের ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। মূলত ইংলিশ খেলোয়াড়রা আইপিএল খেলতে আগ্রহী হওয়ায় সিরিজটি স্থগিত করা হয়েছিলো।

তামিম বনাম মাহমুদুল্লাহ বিবাদ:

টি-২০ বিশ্বকাপের জন্য দল ঘোষণার ঠিক আগে, তালিকা থেকে তামিম তার নাম প্রত্যাহার করে নেন। কারণ এই ফরম্যাটে যারা নিয়মিত খেলছিলেন, তাদের সুযোগ দিতেই এমন সিদ্বান্ত নেন তামিম।

এক ভিডিও বার্তায় তামিম বলেছিলেন, বিশ্বকাপ থেকে সরে যাবার আগে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের সাথে কথা বলেছেন তিনি। কিন্তু পরে গুঞ্জন উঠে, টি-২০ অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহর সঙ্গে সমস্যার কারণে সরে দাঁড়ান তিনি।

তামিম এই ফরম্যাটে অনিয়মিত ছিলেন এবং মার্চ ২০১৯ থেকে কোন ম্যাচ খেলেননি। তাই বিশ্বকাপের জন্য দল নিয়ে আলোচনার সময় তামিমের নাম যখন প্রস্তাব করা হয়, তখন মাহমুদুল্লাহর যুক্তি ছিলো- এই ফরম্যাটে নিয়মিত খেলা খেলোয়াড়দের বিবেচনা করা উচিত।

তামিম যখন, টিম মিটিং এবং মাহমুদুল্লাহর অবস্থান সম্পর্কে জানতে পেরেছিলেন তখন টুর্নামেন্ট থেকে নিজেকে সরিয়ে নিতে দ্বিধাবোধ করেননি। পরে বলা হয়েছিল, দুই সিনিয়র খেলোয়াড়ের মধ্যে সমস্যা ছিল। কিন্তু তারা উভয়ই তা অস্বীকার করেছিলেন।

হতাশার টি-২০ বিশ্বকাপ:

ধীর গতির উইকেট বানিয়ে ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ জয় আত্মবিশ্বাস বাড়িয়েছিলো বাংলাদেশের। এটি নিয়ে কেউ মাথা ঘামায়নি। এতে ফলাফল দাঁড়ায়, বিশ্বকাপে বাংলাদেশ সুপার ফ্লপ।

মাহমুদুল্লাহর নেতৃত্বে বাংলাদেশ দল বিশ্বকাপে গিয়েছিলো। যেখানে মাহমুদুল্লাহ-সাকিব ও মুশফিকদের টি-২০ বিশ্বকাপ খেলার অভিজ্ঞতাও ছিল। কিন্তু বাছাইপর্বের প্রথম ম্যাচেই হোচট খায় তারা। স্কটল্যান্ডের কাছে হার মানে। এরপর স্বাগতিক ওমান এবং পাপুয়া নিউ গিনির বিপক্ষে ম্যাচ জিতে বাংলাদেশ সুপার টুয়েলভে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে।

এর আগে, ২০০৭ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে মাত্র একটি ম্যাচ জিতেছিল বাংলাদেশ। এবারও রেকর্ডেও পরিবর্তন হয়নি। শ্রীলংকার বিপক্ষে ম্যাচ জয়ের খুব কাছে এসেছিল কিন্তু, ম্যাচটি হেরে যাওয়ায় বিপদেই পড়ে বাংলাদেশ। পরের ম্যাচগুলিতে তাদের পারফর্মেন্স আরো খারাপ হয় এবং কোন ম্যাচই জিততে পারেনি। পুরো আসরজুড়ে ব্যাটার-বোলারদের পারফরমেন্স মোটেও আশানুরুপ ছিলো না। ফিল্ডিংয়ে ১০টি ক্যাচ ছেড়েছিল তারা।

মুশফিকের আয়নাবাজি:

টি-২০ বিশ্বকাপ সুপার টুয়েলভে পাঁচ ম্যাচে ২৪৪টি ডট বল খেলে বাংলাদেশ। প্রতি ম্যাচে গড়ে ৪৯টি। টি-২০ ম্যাচের সাফল্যের চাবিকাঠি হল, কম সংখ্যক ডট বল খেলা। কিন্তু বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন যখন অতিরিক্ত ডট বল খেলার জন্য খেলোয়াড়দের সমালোচনা করেন, তখন ক্রিকেটাররা এটিকে নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন বলে মনে করেন।

তবে স্কটল্যান্ডের কাছে হার মেনে নিতে পারেননি পাপন। খেলোয়াড়দের প্রতিশ্রুতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেন তিনি। বিশেষ করে তিন সিনিয়র খেলোয়াড় সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের ধীরগতির ব্যাটিং পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেন তিনি। ক্রিকেটাররাও-বিশেষ করে তিন সিনিয়র ক্রিকেটারই সেই সমালোচনায় তেতে উঠেন এবং প্রতিশোধ নিতে ব্যস্ত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে এসে কড়া জবাব দেন সাকিব। মুশফিক সমালোচকদের নিজেদের আয়নায় মুখ দেখতে বলেছিলেন। তার দেয়া বিবৃতিটি সামাজিক মাধ্যমে তীব্রভাবে ট্রলড হয়েছিলো। মাহমুদুল্লাহ বলেছিলেন, ‘সমালোচনা হতেই হবে। এটা কাম্য। তবে সুস্থ সমালোচনা সবার জন্য ভালো।’

বিশ্বকাপের পর মাহমুদুল্লাহর অধিনায়কত্ব, ডোমিঙ্গোর কোচিং এবং সার্বিক দল পরিকল্পনা, লক্ষ্য ও খেলোয়াড়দের মানসিকতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। এবারের বিশ্বকাপের পারফরমেন্স স্পষ্ট করে দিয়েছে, ‘সর্বাঙ্গে ব্যথা, ওষুধ দেব কোথা’।

পরিশেষে একটি সুসংবাদ:

সকল হতাশাজনক আলোচনা এবং ফলাফলের মধ্যে বাংলাদেশের নারী ক্রিকেটারদের বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জনের খবরটি উপভোগ করার মত ছিল। হারারেতে নয় দলের বাছাইপর্বের টুর্নামেন্ট বাতিল হবার পর বাংলাদেশ দল প্রথমবারের মতো নিউজিল্যান্ডে ২০২২ সালের নারী বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ পায়।

দক্ষিণ আফ্রিকায় কোভিডের নতুন ধরণ ”অমিক্রন” দেখা দেয়ায় আয়োজক দেশ জিম্বাবুয়েসহ বেশ কয়েকটি আফ্রিকান দেশ থেকে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার কারণে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল টুর্নামেন্টটি স্থগিতের ঘোষণা করে।

পাকিস্তানকে ৩ উইকেটে হারিয়ে আসর শুরু করে নারী ক্রিকেট দল। এরপর যুক্তরাষ্ট্রকে ২৭০ রানে হারায় তারা। তবে বৃষ্টি আইনে থাইল্যান্ডের কাছে ১৬ রানে হারে তারা। তারপরও ”বি” গ্রুপে শীর্ষে ছিলো বাংলাদেশ। বাংলাদেশের পাশাপাশি পাকিস্তান এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজ তাদের র‌্যাংঙ্কিংয়ের ভিত্তিতে আইসিসি নারী বিশ্বকাপ ২০২২-এ খেলার যোগ্যতা অর্জন করে।