ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ঈদ বাজারে খানিকটা উত্তাপ
রিয়াসাদ আজিম ॥এবার রমজানের শুরু থেকেই ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ঈদ বাজারে খানিকটা উত্তাপ দেখা গেছে। সে কারণে বিক্রেতাদের মুখে ফুটেছে হাঁসি। শুক্রবার ছুটির দিন থাকায় সকাল থেকেই শহরের বিভিন্ন মার্কেটমুখী হয়ে পড়েন ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসী। এদিকে তরুণ-তরুণীসহ সব বয়সী মানুষের পদচারণায় দুপুর ১২টার মধ্যেই মার্কেট ও বিপণিবিতানগুলো মুখরিত হয়ে ওঠে। বিপুলসংখ্যক ক্রেতা সমাগমে দুপুরের পর থেকেই মার্কেটগুলোতে বেচাকেনার ধুম পড়ে যায়। দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা না থাকায় রোজার প্রথম থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিভিন্ন মার্কেট ও বিপণিবিতানগুলো বেশ জমে উঠেছে। নানা সাজে সাজানো হয়েছে মাকেটগুলো । বিশেষ করে বাচ্চা ও তরুণ-তরুণীদের তৈরি পোশাকের দোকানে বেশ বেচাকেনা লক্ষ্য করা গেছে। নিজেদের পছন্দনীয় নিত্য-নতুন ডিজাইনের পোশাক কিনতে এক দোকান থেকে অন্য দোকানে সাশ্রয়ী মূল্যে কিনতে ছুটে বেড়াচ্ছেন অনেকেই। আর এই ঈদবাজারে মানুষের যাতায়াত স্বাচ্ছন্দ্যের জন্য জেলা পুলিশের ব্যতিক্রম ধর্মী বিভিন্ন উদ্যোগ লক্ষ করা গেছে। জেলা পুলিশ কন্ট্রোল স্থাপন করেছে শহরের প্রাণকেন্দ্র পৌর মার্কেটের সামনে। বাজারের বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশের উপস্থিতি টহল বৃদ্ধি করা হয়েছে। যানবাহন চলাচল স্বাচ্ছন্দ্যের জন্য এবার বিভিন্ন কৌশল নিয়েছে ট্রাফিক পুলিশ। রাস্তায় বিএসআরএম এর তৈরী হলুদ রঙ্গের “কোন” দিয়ে ডিভাইডার চেইন করা হয়েছে। শহরের গুরুত্পূর্ণ সড়ক ও মোড়ে এই ডিভাইডার “কোন” এর জন্য শৃঙ্খলভাবে চলছে বিভিন্ন যানবাহন। কয়েকটি সড়কে যান চলাচলে নতুন নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এবার ঈদে শহরে যানজট এখন পর্যন্ত অনেকটা হ্রাস পর্যায়ে আছে। সকল প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা যেন না ঘটে বিভিন্ন পয়েন্টে অতিরিক্ত পুলিশ দায়িত্ব পালন করছে।
এদিকে শহরের সুপার মাকের্ট, সিটি সেন্টার, ফরিদ উদ্দিন আনোয়ার টাওয়ার, পৌর আধুনিক সুপার মাকের্ট, বিবাড়িয়া টাওয়ার, নিউ মাকেট, সড়ক বাজার গুরে দেখা যায় মার্কেটগুলোয় পুরোদমে চলছে ঈদের কেনাকাটা। তবে এ মার্কেটগুলোতে দেখা যায় বেশিরভাগ দোকানে ঝুলছে ভারতীয় সালোয়ার-কামিজ। ভারতীয় সিরিয়ালের চরিত্রের নামে এগুলোর দেয়া হয়েছে বাহারি নাম। সড়ক বাজারের শাড়ির দোকান গুলোতে শাড়ির বেশিরভাগই হয় ইন্ডিয়ান কাতান নয়তো পাকিস্তানি সিল্ক। আছে লেহেঙ্গা ও টপসসহ অন্যান্য পোশাকও। শুধু নারীদের পোশাকের ক্ষেত্রেই নয়, পুরুষদের পোশাকেও ইন্ডিয়া, থাইল্যান্ড, জাপান ও চীন থেকে আসা পণ্য প্রাধান্য পাচ্ছে ।
দেওড়া থেকে পরিবার নিয়ে শপিং করতে আসেন আকিজ উদ্দিন তিনি বললেন, ঈদের পোশাক কিনতে এসেছি। তবে বিক্রেতারা ঈদ পোশাকের দাম একটু বেশি হাঁকালেও দরদাম করে কিনতে পারলে ক্রয়মূল্য সামর্থ্যরে মধ্যেই রয়েছে।
মহাদেব পট্রির মাছরাঙা ফ্যাশন হাওস এ গিয়ে দেখাযায় ২৭ টি নামি-দামি ব্র্যান্ডের আধুনিক ও সর্বশেষ মডেলের পোশাক তোলা হয়েছে। অভিজাত শ্রেণীর ক্রেতা থেকে শুরু করে মধ্যবিত্তদের পোশাকও রয়েছে এখানে।
মাছরাঙা ফ্যাশন হাওস এর স্বত্বাধিকারী জনি মল্লীক জানান, ঈদকে সামনে রেখে প্রস্ততি ভালো। আর বেচাকেনাও ভালো হচ্ছে। এখানে রয়েছে বড় ও শিশুদের রংবেরঙের পোশাক। এর মধ্যে বাচ্চাদের বিভিন্ন ধরনের গেঞ্জি, পাঞ্জাবি, ফতুয়া, ফ্রক ও টপস। বড়দের গেঞ্জি, পাঞ্জাবি, টি-শার্ট, ফতুয়া পাওয়া যাচ্ছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ফকিরাপুল এলাকার বিলাশ বহুল ফ্যাশন হ্উাস নাইন জিরু তে উন্নত মানের দেশী বিদেশী পোশাক পাওয়া যাচ্ছে এখানে।
এবারের ঈদে মেয়েদের সবচেয়ে বেশি আকর্ষণ ভারতীয় থ্রি-পিস পাখি ও পিউ। দেশী পোশাকের চাহিদাও চাহিদা প্রচুর। বিভিন্ন ডিজাইনের আকর্ষণীয় শাড়ি বাজারে এসেছে। দামের ক্ষেত্রে কিছুটা ব্যবধান থাকলেও কিনতে হবে নিজেদের পছন্দনীয় পোশাক। এদিকে ঈদ ফ্যাশন নিয়ে নতুন নতুন ডিজাইন আর বাহারি নামের বড়দের পাশাপাশি ছোটদের পোশাকের বেচাকেনাও বেশ জমজমাট।
এভাবেই চলছে ঈদ বাজারের বেচা-কেনা। কেউ কিনছেন তৈরী পোশাক আর কেউ কেউ কাপড় কিনে সেলাই করে নিচ্ছেন নতুন পোশাক। তাইতো দর্জিরা ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন পোশাক তৈরিতে।
শুধু যে পোশাকের আকর্ষণ তা নয়, মেয়েদের সাজ করতে চুড়ি, গয়না, মেহেদিসহ নানা প্রসাধনী দোকানগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় রয়েছে অনেক। জুতার দোকানগুলোতে নানান ডিজাইনের জুতা সাজানো হয়েছে। দেখে শুনে পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে কিনছে জুতা, চুড়ি গয়নাসহ নানা প্রসাধনী।