রবিবার, ২৮শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ ১৫ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দৈনিক চাঁদাবাজি ৫০ লাখ টাকা

chandaডেস্ক রির্পোট :আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার ক্ষমতায় থাকলেও বাংলাদেশের পরিবহন সেক্টরের সর্ববৃহৎ শ্রমিক সংগঠন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন পরিচালিত হচ্ছে জামায়াত-বিএনপির নেতৃত্বে। দুর্নীতি, চাঁদাবাজি হালাল করার জন্য তারা এই ফেডারেশনে মাত্র ২/১ জন আ’লীগ ও সমমনা দলের প্রতিনিধি রেখেছেন। জামায়াত-বিএনপির নেতৃত্বাধীন এই ফেডারেশন প্রতিদিন রাজধানীর ৪টি বাস টার্মিনাল থেকে প্রায় ৫০ লাখ টাকা চাঁদাবাজি করে। এমন অভিযোগ বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক লীগ, রেজিঃ নং- বি- ২০৯১ এর নেতৃবৃন্দের। এসব অভিযোগে সম্বলিত একটি অভিযোগ তারা ২ ডিসেম্বর ২০১৪ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, গোয়েন্দা সংস্থা ও সংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরে দাখিল করেছে। ঐ অভিযোগ অনুযায়ী জানা যায়, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের অধিকাংশ নেতা-কর্মীই জামায়াত-বিএনপির। এই ফেডারেশনের অন্তর্ভূক্ত সংগঠন পরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ প্রতিদিন রাজধানীর বাস টার্মিনালগুলোতে ৫০ লাখ টাকা চাঁদাবাজি করে। অভিযোগকারীদের দাবী স্বাধীনতার ৪৪ বছর পরও বাংলাদেশে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কোন পরিবহন শ্রমিক সংগঠন প্রতিষ্ঠিত হয়নি। সম্প্রতি মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণীত শ্রমিকদের দ্বারা বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক লীগ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সংগঠনটির দাবী অনুযায়ী সারা বাংলাদেশের ৭১ লাখ পরিবহন শ্রমিক তাদের এই সংগঠনের পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ হবে। অভিযোগ অনুযায়ী জানা যায়, “বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক লীগ” আত্মপ্রাকশ করে শ্রমিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করতে থাকলেও বিভিন্ন মহল থেকে সংগঠনটির রেজিষ্ট্রেশন বাতিল চেয়ে শ্রম মন্ত্রণালয়, শ্রম সচিব ও শ্রম পরিচালকগণকে চিঠি দিয়ে অনুরোধ করে। এসবের নেতৃত্ব দিচ্ছে পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ। তিনি গত জোট সরকারের সময় ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ঐ সংগঠনের সভাপতি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এবং বর্তমানে ঢাকা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মির্জা আব্বাস। বর্তমানে বিএনপি নেতা সেই খন্দকার এনায়েত উল্লাহ ভোল পাল্টে নব্য আ’লীগ সেজে প্রশাসনকে ম্যানেজ করে সারাদেশে চাঁদাবাজি করছে। এতে মহাজোট সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। মহাজোট সরকারকে বিব্রত করার জন্য বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন ৬৫ বার পরিবহন ধর্মঘট দিয়েছে। অভিযোগে বলা হয়, নোয়াখালী জেলার ছাগলনাইয়া উপজেলার রাজাকার কমান্ডারের ছেলে এই অভিযুক্ত খন্দকার এনায়েত উল্লাহ। প্রথমে ১টি লক্কর-ঝক্কর বাসের অর্ধেক মালিক ছিল। বর্তমানে তার মিরপুর ১১নং সেকশনে ৭ তলা বাড়ী, ধানমন্ডির শুক্রাবাদে ৫ তলা বাড়ী, ছেলের নামে কানাডায় বাড়ী। বর্তমানে এনায়েত উল্লাহ সিলেট, বগুড়া ও মিরপুর রোডে চলাচলরত প্রায় শতাধিক গাড়ির মালিক। অভিযোগ সূত্রে আরও জানা যায়, গত ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পূর্বে নির্বাচন বানচাল করার জন্যে জামায়াত বিএনপি বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকান্ড ও পরিবহনে অগ্নিসংযোগ করে। এতে সারাদেশে ৫৬ জন পরিবহন শ্রমিক নিহত হয়। কিন্তু এ ব্যাপারে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন একটি শোক সভা পর্যন্ত করে না। পক্ষান্তরে নিহত পরিবহন শ্রমিক হত্যা মামলার অন্যতম আসামী বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার বিশেষ সহকারী এড. মামনুর রহমান শিমুল বিশ্বাসকে পুলিশ গ্রেফতার করলে তার মুক্তির দাবীতে দেশব্যাপী বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন পরিবহন ধর্মঘট আহ্বান করে মহাজোট সরকারকে নাজেহাল করার চেষ্টা করে। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক লীগ তাদের অভিযোগে আরো উল্লেখ করে জয়বাংলার বিরুদ্ধে অবস্থানকারী বামপন্থী নেতা নিজে স্বাক্ষর করে সরকারের বিভিন্ন জায়গা বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক লীগ বাতিল করার আবেদন করে এবং গত ১০ নভেম্বর ২০১৪ পরিবহন মালিক সমিতির নেতা খন্দকার এনায়েত উল্লাহ বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক লীগকে প্রতিহত ও প্রতিরোধ করার ঘোষণা দিয়েছেন। অভিযোগ অনুযায়ী জানা যায়, ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী অবৈধ চাঁদাবাজির টাকা দিয়ে তোপখানা রোডে অবস্থিত ১/১১’র আলোচিত ব্যক্তি ফেরদৌস কোরেসির কাছ থেকে একটি বিল্ডিং ক্রয় করেছেন। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক লীগ সরকারের কাছে তাদের দায়ের করা অভিযোগে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহনে শ্রমিক ফেডারেশনের ৩০ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির রাজনৈতিক পরিচয় ও দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরেছেন।